মাথার
ওপরে বাবা যতদিন ছিলেন আমাকে কোনদিন পড়াশুনো নিয়ে চিন্তা করতে হয়নি।
বাবা মারা যাবার পর কি যে হল, আমি যেন চোখে অন্ধকার দেখতে লাগলাম। কলেজে
পড়তে পড়তেই হঠাৎ বাবার মৃত্যু। ইচ্ছে ছিল কলেজ পাশ করার পর আরও
হায়ারস্টাডী করবার। কিন্তু ভাগ্যে না থাকলে যা হয়। আপাতত পড়াশুনার পাঠ
এখানেই চুকিয়ে দিয়ে আমাকে চাকরির খোঁজে বেরোতে হবে। এই বাজারে চাকরি
পাওয়া বেশ কঠিন। তাও আমাকে চেষ্টা করতে হবে। কারণ মাথার উপরে মা এখনও
বেঁচে রয়েছেন। একমাত্র ছেলে হয়ে মা’য়ের মুখি হাসি ফোটানো আমার কর্তব্য।
শহরে বাড়ী ভাড়া করে থাকাটা বেশ কঠিন। মা’কে পাঠিয়েদিলাম গ্রামের বাড়ীতে। মুর্শিদাবাদ জেলায় একটু ভেতরের দিকে আমাদের একচালা একটা গ্রামের বাড়ী। বাবা একটা সোনার দোকানে কাজ করতেন। বছর সাতেক আগে আমাকে আর মাকে সঙ্গে করে নিয়ে চলে এসেছিলেন কলকাতায়। মজুরীর কাজ করে যা মাইনে পেতেন তাতে আমাদের সংসারটা চলত। আমার পড়াশুনার খরচ বহন করা থেকে শুরু করে কলকাতার বুকে থেকে একটা ঘরের মাসিক ৫০০ টাকা ভাড়া সবই বাবাই যোগাতেন। হঠাৎ কি যে হল। আমার ভবিষ্যতের সব স্বপ্নগুলোই যেন ভেঙে সব তছনছ হয়ে গেল। মনে হল এ জীবনে বোধহয় আর কিছু পাওয়া হল না। ভেবেছিলাম খুব সুন্দর দেখে একটা মেয়েকে বিয়ে করব। সংসার হবে, বাচ্চাকাচ্চা হবে। তা না সব যেন তখনকার মতন জলাঞ্জলী গেল। আপাতত বিয়ের ইচ্ছাটাও মাথা থেকে তখন উবে গেল। আগে আমাকে একটা কাজ জোগাড় করতে হবে। গ্রামের একচালা বাড়ীতে মা একা রয়েছেন। মা’কে প্রতিমাসে কিছু টাকা পাঠাতে হবে। কোনদিন যদি ভাগ্যদেবতা আমার উপর প্রসন্ন হন। বিয়ে আমি করবই। তা একটু দেরীতে হোক না। তাতে ক্ষতি কি?
বাবা মা’কে অল্প বয়সেই বিয়ে করেছিলেন। আসলে অল্প বয়সে বিয়ে করাটা আমাদের পূর্বপূরুষদের রীতি অনুযায়ী। বাবা বেঁচে থাকলে হয়তো বিয়েটা তাড়াতাড়িই দিতেন। কিন্তু আমার একার পক্ষ্যে সেটা তাড়াতাড়ি করে ওঠা সম্ভব নয়। আগে তো নিজের পায়ে শক্ত হয়ে দাঁড়াই, তারপর এসব বিয়ের ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করা যাবে।
আমি হন্যে হয়ে তখন চাকরি খুঁজছি। কেউ আমাকে ৩০০০ টাকা মাইনেরও একটা কাজ দিচ্ছে না। বেশ চিন্তায় পড়ে গেছি। রাতে ঘুম হচ্ছে না। মনটা ভেবে ভেবে শুধু অস্থির হচ্ছে। মনে হচ্ছে দুনিয়াটা কেমন স্বার্থবাদী আর সুবিধাবাদী হয়ে গেছে। মানুষ যদি আজকাল কোন বিপদে পড়ে। তার পাশে দাঁড়ানোরও যেন কেউ নেই। কেউ যদি মুখ ফুটে, কাতর ভাবে বিনয়ভাবে বলে, আমি খুব বিপদে পড়ে গেছি। আমাকে দয়া করে বাঁচান। তাহলেও কি তাকে দেখার কেউ নেই? তাহলে এই দুনিয়ায় বাকীরা সবাই চলছে কি করে? ফুটপাত দিয়ে সবাই তাহলে মুখ নিচু করে চলত। কেউ তাহলে মাথা উঁচু করে তাকাতে পারত না। সবাই ভয়ে ভয়ে দিন কাটাত। আশঙ্কা আর দুর্ভাবনায় জ্বলে পুড়ে মরত। নিরাশায় দিন কাটাতো। যেমন ভাবে দিন কাটাচ্ছি এখন আমি। এই একমাসের মধ্যে আমি যদি একটা কাজ জোটাতে না পারি, তাহলে আমাকে হয়তো আত্মহত্যা করে মরতে হবে। কি করে মুখ দেখাব মা’কে? আমি যে মা’কে কথা দিয়েছি। চাকরি একটা আমি জোটাবোই জোটাবো। মায়েরও মনোবাসনা পূর্ণ হবে। কিন্তু কিছুতেই সে ইচ্ছে পূরণ হচ্ছে না। কে যেন বাধ সেধেছে। আমার নিয়তি আমাকে কোনদিকে টেনে নিয়ে চলেছে কে জানে?
BAKITA DEKHTE CLICK KORUN
শহরে বাড়ী ভাড়া করে থাকাটা বেশ কঠিন। মা’কে পাঠিয়েদিলাম গ্রামের বাড়ীতে। মুর্শিদাবাদ জেলায় একটু ভেতরের দিকে আমাদের একচালা একটা গ্রামের বাড়ী। বাবা একটা সোনার দোকানে কাজ করতেন। বছর সাতেক আগে আমাকে আর মাকে সঙ্গে করে নিয়ে চলে এসেছিলেন কলকাতায়। মজুরীর কাজ করে যা মাইনে পেতেন তাতে আমাদের সংসারটা চলত। আমার পড়াশুনার খরচ বহন করা থেকে শুরু করে কলকাতার বুকে থেকে একটা ঘরের মাসিক ৫০০ টাকা ভাড়া সবই বাবাই যোগাতেন। হঠাৎ কি যে হল। আমার ভবিষ্যতের সব স্বপ্নগুলোই যেন ভেঙে সব তছনছ হয়ে গেল। মনে হল এ জীবনে বোধহয় আর কিছু পাওয়া হল না। ভেবেছিলাম খুব সুন্দর দেখে একটা মেয়েকে বিয়ে করব। সংসার হবে, বাচ্চাকাচ্চা হবে। তা না সব যেন তখনকার মতন জলাঞ্জলী গেল। আপাতত বিয়ের ইচ্ছাটাও মাথা থেকে তখন উবে গেল। আগে আমাকে একটা কাজ জোগাড় করতে হবে। গ্রামের একচালা বাড়ীতে মা একা রয়েছেন। মা’কে প্রতিমাসে কিছু টাকা পাঠাতে হবে। কোনদিন যদি ভাগ্যদেবতা আমার উপর প্রসন্ন হন। বিয়ে আমি করবই। তা একটু দেরীতে হোক না। তাতে ক্ষতি কি?
বাবা মা’কে অল্প বয়সেই বিয়ে করেছিলেন। আসলে অল্প বয়সে বিয়ে করাটা আমাদের পূর্বপূরুষদের রীতি অনুযায়ী। বাবা বেঁচে থাকলে হয়তো বিয়েটা তাড়াতাড়িই দিতেন। কিন্তু আমার একার পক্ষ্যে সেটা তাড়াতাড়ি করে ওঠা সম্ভব নয়। আগে তো নিজের পায়ে শক্ত হয়ে দাঁড়াই, তারপর এসব বিয়ের ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করা যাবে।
আমি হন্যে হয়ে তখন চাকরি খুঁজছি। কেউ আমাকে ৩০০০ টাকা মাইনেরও একটা কাজ দিচ্ছে না। বেশ চিন্তায় পড়ে গেছি। রাতে ঘুম হচ্ছে না। মনটা ভেবে ভেবে শুধু অস্থির হচ্ছে। মনে হচ্ছে দুনিয়াটা কেমন স্বার্থবাদী আর সুবিধাবাদী হয়ে গেছে। মানুষ যদি আজকাল কোন বিপদে পড়ে। তার পাশে দাঁড়ানোরও যেন কেউ নেই। কেউ যদি মুখ ফুটে, কাতর ভাবে বিনয়ভাবে বলে, আমি খুব বিপদে পড়ে গেছি। আমাকে দয়া করে বাঁচান। তাহলেও কি তাকে দেখার কেউ নেই? তাহলে এই দুনিয়ায় বাকীরা সবাই চলছে কি করে? ফুটপাত দিয়ে সবাই তাহলে মুখ নিচু করে চলত। কেউ তাহলে মাথা উঁচু করে তাকাতে পারত না। সবাই ভয়ে ভয়ে দিন কাটাত। আশঙ্কা আর দুর্ভাবনায় জ্বলে পুড়ে মরত। নিরাশায় দিন কাটাতো। যেমন ভাবে দিন কাটাচ্ছি এখন আমি। এই একমাসের মধ্যে আমি যদি একটা কাজ জোটাতে না পারি, তাহলে আমাকে হয়তো আত্মহত্যা করে মরতে হবে। কি করে মুখ দেখাব মা’কে? আমি যে মা’কে কথা দিয়েছি। চাকরি একটা আমি জোটাবোই জোটাবো। মায়েরও মনোবাসনা পূর্ণ হবে। কিন্তু কিছুতেই সে ইচ্ছে পূরণ হচ্ছে না। কে যেন বাধ সেধেছে। আমার নিয়তি আমাকে কোনদিকে টেনে নিয়ে চলেছে কে জানে?
BAKITA DEKHTE CLICK KORUN
No comments:
Post a Comment