Showing posts with label EXCLUSSIVE. Show all posts
Showing posts with label EXCLUSSIVE. Show all posts

Friday, 22 March 2013

চরম সুখ

মাথার ওপরে বাবা যতদিন ছিলেন আমাকে কোনদিন পড়াশুনো নিয়ে চিন্তা করতে হয়নি। বাবা মারা যাবার পর কি যে হল, আমি যেন চোখে অন্ধকার দেখতে লাগলাম। কলেজে পড়তে পড়তেই হঠাৎ বাবার মৃত্যু। ইচ্ছে ছিল কলেজ পাশ করার পর আরও হায়ারস্টাডী করবার। কিন্তু ভাগ্যে না থাকলে যা হয়। আপাতত পড়াশুনার পাঠ এখানেই চুকিয়ে দিয়ে আমাকে চাকরির খোঁজে বেরোতে হবে। এই বাজারে চাকরি পাওয়া বেশ কঠিন। তাও আমাকে চেষ্টা করতে হবে। কারণ মাথার উপরে মা এখনও বেঁচে রয়েছেন। একমাত্র ছেলে হয়ে মা’য়ের মুখি হাসি ফোটানো আমার কর্তব্য।
শহরে বাড়ী ভাড়া করে থাকাটা বেশ কঠিন। মা’কে পাঠিয়েদিলাম গ্রামের বাড়ীতে। মুর্শিদাবাদ জেলায় একটু ভেতরের দিকে আমাদের একচালা একটা গ্রামের বাড়ী। বাবা একটা সোনার দোকানে কাজ করতেন। বছর সাতেক আগে আমাকে আর মাকে সঙ্গে করে নিয়ে চলে এসেছিলেন কলকাতায়। মজুরীর কাজ করে যা মাইনে পেতেন তাতে আমাদের সংসারটা চলত। আমার পড়াশুনার খরচ বহন করা থেকে শুরু করে কলকাতার বুকে থেকে একটা ঘরের মাসিক ৫০০ টাকা ভাড়া সবই বাবাই যোগাতেন। হঠাৎ কি যে হল। আমার ভবিষ্যতের সব স্বপ্নগুলোই যেন ভেঙে সব তছনছ হয়ে গেল। মনে হল এ জীবনে বোধহয় আর কিছু পাওয়া হল না। ভেবেছিলাম খুব সুন্দর দেখে একটা মেয়েকে বিয়ে করব। সংসার হবে, বাচ্চাকাচ্চা হবে। তা না সব যেন তখনকার মতন জলাঞ্জলী গেল। আপাতত বিয়ের ইচ্ছাটাও মাথা থেকে তখন উবে গেল। আগে আমাকে একটা কাজ জোগাড় করতে হবে। গ্রামের একচালা বাড়ীতে মা একা রয়েছেন। মা’কে প্রতিমাসে কিছু টাকা পাঠাতে হবে। কোনদিন যদি ভাগ্যদেবতা আমার উপর প্রসন্ন হন। বিয়ে আমি করবই। তা একটু দেরীতে হোক না। তাতে ক্ষতি কি?
বাবা মা’কে অল্প বয়সেই বিয়ে করেছিলেন। আসলে অল্প বয়সে বিয়ে করাটা আমাদের পূর্বপূরুষদের রীতি অনুযায়ী। বাবা বেঁচে থাকলে হয়তো বিয়েটা তাড়াতাড়িই দিতেন। কিন্তু আমার একার পক্ষ্যে সেটা তাড়াতাড়ি করে ওঠা সম্ভব নয়। আগে তো নিজের পায়ে শক্ত হয়ে দাঁড়াই, তারপর এসব বিয়ের ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করা যাবে।
আমি হন্যে হয়ে তখন চাকরি খুঁজছি। কেউ আমাকে ৩০০০ টাকা মাইনেরও একটা কাজ দিচ্ছে না। বেশ চিন্তায় পড়ে গেছি। রাতে ঘুম হচ্ছে না। মনটা ভেবে ভেবে শুধু অস্থির হচ্ছে। মনে হচ্ছে দুনিয়াটা কেমন স্বার্থবাদী আর সুবিধাবাদী হয়ে গেছে। মানুষ যদি আজকাল কোন বিপদে পড়ে। তার পাশে দাঁড়ানোরও যেন কেউ নেই। কেউ যদি মুখ ফুটে, কাতর ভাবে বিনয়ভাবে বলে, আমি খুব বিপদে পড়ে গেছি। আমাকে দয়া করে বাঁচান। তাহলেও কি তাকে দেখার কেউ নেই? তাহলে এই দুনিয়ায় বাকীরা সবাই চলছে কি করে? ফুটপাত দিয়ে সবাই তাহলে মুখ নিচু করে চলত। কেউ তাহলে মাথা উঁচু করে তাকাতে পারত না। সবাই ভয়ে ভয়ে দিন কাটাত। আশঙ্কা আর দুর্ভাবনায় জ্বলে পুড়ে মরত। নিরাশায় দিন কাটাতো। যেমন ভাবে দিন কাটাচ্ছি এখন আমি। এই একমাসের মধ্যে আমি যদি একটা কাজ জোটাতে না পারি, তাহলে আমাকে হয়তো আত্মহত্যা করে মরতে হবে। কি করে মুখ দেখাব মা’কে? আমি যে মা’কে কথা দিয়েছি। চাকরি একটা আমি জোটাবোই জোটাবো। মায়েরও মনোবাসনা পূর্ণ হবে। কিন্তু কিছুতেই সে ইচ্ছে পূরণ হচ্ছে না। কে যেন বাধ সেধেছে। আমার নিয়তি আমাকে কোনদিকে টেনে নিয়ে চলেছে কে জানে?

BAKITA DEKHTE CLICK KORUN 

Sunday, 3 March 2013

ঠগীর প্রেম

চরম সুখ

মাথার ওপরে বাবা যতদিন ছিলেন আমাকে কোনদিন পড়াশুনো নিয়ে চিন্তা করতে হয়নি। বাবা মারা যাবার পর কি যে হল, আমি যেন চোখে অন্ধকার দেখতে লাগলাম। কলেজে পড়তে পড়তেই হঠাৎ বাবার মৃত্যু। ইচ্ছে ছিল কলেজ পাশ করার পর আরও হায়ারস্টাডী করবার। কিন্তু ভাগ্যে না থাকলে যা হয়। আপাতত পড়াশুনার পাঠ এখানেই চুকিয়ে দিয়ে আমাকে চাকরির খোঁজে বেরোতে হবে। এই বাজারে চাকরি পাওয়া বেশ কঠিন। তাও আমাকে চেষ্টা করতে হবে। কারণ মাথার উপরে মা এখনও বেঁচে রয়েছেন। একমাত্র ছেলে হয়ে মা’য়ের মুখি হাসি ফোটানো আমার কর্তব্য।
শহরে বাড়ী ভাড়া করে থাকাটা বেশ কঠিন। মা’কে পাঠিয়েদিলাম গ্রামের বাড়ীতে। মুর্শিদাবাদ জেলায় একটু ভেতরের দিকে আমাদের একচালা একটা গ্রামের বাড়ী। বাবা একটা সোনার দোকানে কাজ করতেন। বছর সাতেক আগে আমাকে আর মাকে সঙ্গে করে নিয়ে চলে এসেছিলেন কলকাতায়। মজুরীর কাজ করে যা মাইনে পেতেন তাতে আমাদের সংসারটা চলত। আমার পড়াশুনার খরচ বহন করা থেকে শুরু করে কলকাতার বুকে থেকে একটা ঘরের মাসিক ৫০০ টাকা ভাড়া সবই বাবাই যোগাতেন। হঠাৎ কি যে হল। আমার ভবিষ্যতের সব স্বপ্নগুলোই যেন ভেঙে সব তছনছ হয়ে গেল। মনে হল এ জীবনে বোধহয় আর কিছু পাওয়া হল না। ভেবেছিলাম খুব সুন্দর দেখে একটা মেয়েকে বিয়ে করব। সংসার হবে, বাচ্চাকাচ্চা হবে। তা না সব যেন তখনকার মতন জলাঞ্জলী গেল। আপাতত বিয়ের ইচ্ছাটাও মাথা থেকে তখন উবে গেল। আগে আমাকে একটা কাজ জোগাড় করতে হবে। গ্রামের একচালা বাড়ীতে মা একা রয়েছেন। মা’কে প্রতিমাসে কিছু টাকা পাঠাতে হবে। কোনদিন যদি ভাগ্যদেবতা আমার উপর প্রসন্ন হন। বিয়ে আমি করবই। তা একটু দেরীতে হোক না। তাতে ক্ষতি কি?
বাবা মা’কে অল্প বয়সেই বিয়ে করেছিলেন। আসলে অল্প বয়সে বিয়ে করাটা আমাদের পূর্বপূরুষদের রীতি অনুযায়ী। বাবা বেঁচে থাকলে হয়তো বিয়েটা তাড়াতাড়িই দিতেন। কিন্তু আমার একার পক্ষ্যে সেটা তাড়াতাড়ি করে ওঠা সম্ভব নয়। আগে তো নিজের পায়ে শক্ত হয়ে দাঁড়াই, তারপর এসব বিয়ের ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করা যাবে।
আমি হন্যে হয়ে তখন চাকরি খুঁজছি। কেউ আমাকে ৩০০০ টাকা মাইনেরও একটা কাজ দিচ্ছে না। বেশ চিন্তায় পড়ে গেছি। রাতে ঘুম হচ্ছে না। মনটা ভেবে ভেবে শুধু অস্থির হচ্ছে। মনে হচ্ছে দুনিয়াটা কেমন স্বার্থবাদী আর সুবিধাবাদী হয়ে গেছে। মানুষ যদি আজকাল কোন বিপদে পড়ে। তার পাশে দাঁড়ানোরও যেন কেউ নেই। কেউ যদি মুখ ফুটে, কাতর ভাবে বিনয়ভাবে বলে, আমি খুব বিপদে পড়ে গেছি। আমাকে দয়া করে বাঁচান। তাহলেও কি তাকে দেখার কেউ নেই? তাহলে এই দুনিয়ায় বাকীরা সবাই চলছে কি করে? ফুটপাত দিয়ে সবাই তাহলে মুখ নিচু করে চলত। কেউ তাহলে মাথা উঁচু করে তাকাতে পারত না। সবাই ভয়ে ভয়ে দিন কাটাত। আশঙ্কা আর দুর্ভাবনায় জ্বলে পুড়ে মরত। নিরাশায় দিন কাটাতো। যেমন ভাবে দিন কাটাচ্ছি এখন আমি। এই একমাসের মধ্যে আমি যদি একটা কাজ জোটাতে না পারি, তাহলে আমাকে হয়তো আত্মহত্যা করে মরতে হবে। কি করে মুখ দেখাব মা’কে? আমি যে মা’কে কথা দিয়েছি। চাকরি একটা আমি জোটাবোই জোটাবো। মায়েরও মনোবাসনা পূর্ণ হবে। কিন্তু কিছুতেই সে ইচ্ছে পূরণ হচ্ছে না। কে যেন বাধ সেধেছে। আমার নিয়তি আমাকে কোনদিকে টেনে নিয়ে চলেছে কে জানে?



BAKITA DEKHTE CLICK KORUN 

Saturday, 2 March 2013

রাজা সাহেব

মানুষের জীবনে এমন কিছু ঘটে যায় যা মানুষ কখনো ভুলতে পারে না। আমার জীবনে এমন কিছু ঘটেছিল যা আমি কোনদিনও ভুলতে পারিনি। এই ঘটনাটা ঘটেছিল আমার চোখের সামনে। এই ঘটনার সব দৃশ্য এখনো আমার চোখের সামনে ভাসে। আমি বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। কথাটা পুরোপুরি সত্যি নয়। সমাজের চোখে আমার আরেকটি ভাই আছে যাকে সমাজের সবাই আমার বাবা-মায়ের দ্বিতীয় সন্তান হিসাবে চেনে, কিন্তু আমি জানতাম আমার ভাইটি আরেক পুরুষের বীর্য্যের ফসল।

আমার মা কাকলি সেন যাকে আপনারা এতক্ষণে ব্যভিচারিনী ভাবছেন, আমার মা কিন্তু পুরোপুরি এরকম মহিলা ছিল না। ঘটনাটা অনেক ভোলার চেষ্টা করেছি কিন্তু পারিনি।


আজ থেকে দশ বছর আগেকার ঘটনা। আমার বাবা ট্রান্সফার হয়ে আসে একটি গ্রামে। আমার বাবা জয়ন্ত সেন একজন ডাক্তার, এই গ্রামের একটি হাসপাতালে আসে। আমরাও কিছুদিন পরে সেই গ্রামে আসি। আমরা বলতে আমি আর মা। গ্রামটি খুব সুন্দর ছিল, চারিদিক ধু ধু করছে মাঠ। কিন্তু একটাই জিনিস খুব বিরক্তিকর ছিল – জায়গাটির আবহাওয়া প্রচন্ড গরম ছিল।

প্রথম দিন আসার পরেই আমার শরীর খারাপ হয়ে যায় গরমে। আমরা যে বাংলোতে থাকতাম সেখান থেকে গ্রামটি অনেক দূর ছিল। বাবাকে রোজ গাড়ী করে নিয়ে যেত হাসপাতালে রঘু নামে একটি লোক। আমাদের বাড়ীতে ঘরদোর পরিস্কার করার জন্য একটি মহিলা থাকত, মহিলাটির নাম ছিল কমলা। বেঁটে মোটাসোটা সেই মহিলাটি মায়ের সাথে খুব গল্প করত, মা আশেপাশে কাউকে চিনত না বলে কমলার সাথে সবরকম গল্প করত।

একদিন আমি তাদের কথা আড়ি পেতে শুনেছিলাম। কমলা মাকে বলছে – "বৌদি একটা কথা বলব, কিছু মনে করবে না তো!!!"

মা বলল – কি বলবি বল?

কমলা – শুনেছি... শহুরে মেয়েদের অনেক ছেলে বন্ধু হয়, তা তোমার কোন বিয়ের আগে ছেলে বন্ধু ছিল নাকি?

মা – আমার বাবাকে তো চিনতিস না, আমাকে মেরেই ফেলত।

কমলা বলল – সত্যি কথা বল না... তোমার মত এত সুন্দরীর কেউ ছিল না!

মা – মিথ্যে কেন বলতে যাব তোকে!

কমলা – তুমি বলছ তোমার জীবনে দাদা ছাড়া কেউ ছিল না।

মা – এতে অবাক হওয়ার কি হলো?

কমলা – না এমনি!!! আচ্ছা তুমি দাদাকে খুব ভালোবাসো, না?

মা – বিয়ের দশ বছর হয়ে গেল আর ভালবাসব না, কি বলিস!!!

কমলা – জানো বৌদি, এই গ্রামটায় বেশীদিন কোনো ডাক্তার টেকে না।

মা – কেন?

কমলা – এখানে এই হাসপাতালগুলোতে খুব ওষুধের চোরাকারবারী চলে!!! এখানকার রাজনৈতিক দলের কিছু লোক যুক্ত থাকে...


PUROTA PORTE CLICK KORUN 

Thursday, 28 February 2013

Tuesday, 26 February 2013

উপন্যাস - এক পশলা বৃষ্টি


দীপঙ্কর অফিসিয়াল খামটার উপর ভালো করে আর একবার চোখ বুলালো এটা তার অনেক দিনকার অভ্যেস । সে জানে তার খুব একটা ভুল হয় না । তবু সে খুব সাবধানী । কারণ সে জানে ঠিকানা ভুল থাকলে তার টাকাটাই গচ্চা যাবে । অনেক মেহনত করে তাকে টাকা রোজগার করতে হয় । এরপর খামের মুখটা সাবধানে আঠা দিয়ে বন্ধ করে পোস্ট অফিসের কাউন্টারে রেখে সে বলল - দেখুন তো কত টাকার স্ট্যাম্প দিতে হবে ?
ছোট্ট দাঁড়ি পাল্লায় চাপিয়ে পোস্টম্যান বলল -পাঁচ টাকা । দীপঙ্কর পকেট থেকে পাঁচ টাকার একটা নোট বের করে বলল- পাঁচ টাকার টিকিট দিন । কোরবানদা চিঠি বাছতে বাছতে বলল- কবে খাওয়াচ্ছ আমাদের ? - আগে এ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার হাতে দিন । - এবার হয়ে যাবে তোমার। - বলছেন হবে । কবে হবে ? বয়স তিরিশ পেরিয়ে গেল। দীপঙ্কর আক্ষেপ করে বলল - আমার বোধহয় চাকরি হবে না । -তোমার কথা আমরা প্রায়ই আলোচনা করি। দীপঙ্কর পাঁচ টাকার স্ট্যাম্পটা খামের উপর লাগালো। - উঠল । - কপাল জোরে শম্পা চাকরিটা পেয়ে গেল। - হ্যাঁ । সেই রকমই শুনেছি। -প্যানেলে শম্পা তিন নম্বরে ছিল । বাবার ইনফ্লুয়েন্সে চাকরিটা পেয়ে গেল । দীপঙ্কর টিকিট আঁটা খামটা টেবিলের উপর রেখে বলল - খামটা রইল। আর কিছু না বলে বেরিয়ে যেতে থমকে দাঁড়াল। শম্পা সেদিন আমাদের মিষ্টি খাওয়াল। দীপঙ্কর নামটা শুনে চমকে উঠে পকেট থেকে কিছু খুচরো পয়সা বের করে বলল - পাঁচটা পোস্টকার্ড দিন। হঠাৎ কে যেন পিছনে এসে দাঁড়াল । দীপঙ্কর পিছন ফিরে আর দেখল না । নতুন শাড়ির খসখস শব্দ আর মন মাতাল করা সেন্টের সুগন্ধে বুঝল পশ্চাদচারিনী কোনো মেয়ে 


BAKITA EKHANE 

অতৃপ্ত হৃদয়


 একমনে হেঁটে চলেছে অমিত রাস্তার ফুটপাথের উপর দিয়ে ! কোনদিকে দৃষ্টিপাত নেই ! মাথা নামানো নিচের দিকে রাস্তার কোনো কলাহোল তার কানে ঢুকছে না ! কানের ভিতরে বেজে যাচ্ছে অনিতাদির ভর্ত্সনা !
- তুই কি পুরুষ মানুষ ??
আরও অনেক কথা ভর্ত্সনার সুরে বলেছিল অনিতাদি ! জীবনে প্রথম কেউ অমিত কে এই ভাবে ভর্ত্সনা করলো ! অথচ অমিত তো কোনো দোষ করেনি ! তবুও কেন যে অমিত কে অনিতাদী এমন ভাবে অপমান করলো? চোখের কনে কেমন যেন জ্বালা জ্বালা করতে লাগলো অমিতের ! এই অপমানের জ্বালা ঠিক হজম করতে পারছিলনা সে ! তাই একবার তার অন্তরাত্মা ফুঁসে উঠে বিদ্রোহ করতে চাইল ! কিন্তু অমিতের অন্য সত্তা অমিতকে সেটা করতে দিচ্ছেনা কিছুতেই ! কারণ অমিত অনিতাদিকে খুবই ভালোবাসে ! অনিতা দি যদিও অমিতের নিজের কোনো দিদি নয় অর একমাত্র বড় দিদি সুবর্ণার বান্ধবী অনিতা দিদি ! দুজনেই ছিল হরিহর আত্মা ! আর অমিত ছিলো ওর দিদির নেওটা ! দিদি যখনি কোথাও যেত অমিতকে সঙ্গে নিয়ে যেত ! যদিও অমিত সুবর্ণার থেকে প্রায় ৬ বছরের ছোট তবুও লোকে সুবর্ণাকে দেখে টিটকারী দিয়ে বলত "এই সুবি ! তোর বডিগার্ড তোকে গার্ড দিছে নাকি তুই তোর বডিগার্ডকে গার্ড করছিস?" সুবর্ণ সবাইকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ভেন্গিয়ে বলতো " বডিগার্ডের দরকার তোমাদের ! আমার কোনো বডিগার্ডের প্রয়োজন নেই ! এটা আমার ভাই ! আর আমার ভাই যতক্ষণ আমার সাথে আছে ততক্ষণ আমার কোনো বডিগার্ডের প্রয়োজন নেই ! "
একমাত্র যে সময় টুকু সুবর্ণ আর অমিত স্কুলে থাকত সেই সময়টুকুই দুজনে আলাদা থাকত ! অমিতের বাবা মা খুব চিন্তা করতেন যখন সুবর্ণার বিয়ে হয়ে যাবে তখন অমিত আর সুবর্ণ কি করে একে অপরকে ছেড়ে থাকবে ! সেই সুবর্নাদির বান্ধবী হিসাবে অমিত অনিতারও প্রিয় পাত্র হয়ে গেছিল ! আর তার থেকেও অমিতের উপর অনিতার অশেষ স্নেহের কারণ হোলো অনিতার কোনো ভাই ছিল না ! মা বাবার একমাত্র সন্তান ছিল অনিতা ! নিজের কোনো ভাই বন না থাকার দুক্ষ অমিত কে দিয়ে প্রুওন করে নিয়েছিলো অনিতা ! আর আজ সেই অনিতা অমিতকে অপমান কোরে ওকে লাথি মেরে অর বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিল !
লজ্জায় অপমানে অমিতের কান মাথা ঝালাপালা করে উঠলো ! নিজেকে সামলানোর অনেক চেষ্টা করেও সামলাতে পারল না অমিত ! চলতে চলতেই হাউ হাউ করে কেঁদে উঠলো অমিত ! চোখের জ্বলে ঝাপসা হয়ে উঠলো চোখের দৃষ্টি ! কান্নার গুমড়ে চোখের সামনে অন্ধকার দেখতে লাগলো অমিত ! তারপর হটাত একটা প্রচন্ড জোরে পিছন থেকে ধাক্কা আর চারিদিক থেকে ভেসে এলো গেলো গেলো রব ! তারপরের ঘটনা অমিত আর কিছুই জানেনা !
সবে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে ! সুবর্ণা আর অনিতার সিট পরেছে বারাসতের মহারানী বালিকা বিদ্যালয়ে ! সুবর্নাদের বাড়ি থেকে অনেক দুরে ! যেতে গেলে আগে গঙ্গা পার হয়ে তারপর অটো বা বাসে করে মহারানী বালিকা বিদ্যালয়ে পৌঁছনো যায় ! সেটাতেও কোনো অসুবিধা ছিলোনা ! কিন্তু সব থেকে বেশি অসুবিধা হোলো নৈহাটির ফেরিঘাটে আড্ডা দেওয়া কিছু বখাটে ছেলেদের নিয়ে ! প্রথম যেদিন ওরা পরীক্ষা দিতে যায় সেদিন ওদের সাথে অমিতের বাবা গেছিলেন তাই হয়ত সেই রকম বিপদের আভাস ওরা পায়নি ! কিন্তু দ্বিতীয় দিন থেকে শুরু হয়ে গেলো এক অভাবনীয় জঘন্য ইভটিজিং ! যাবার সময় ওরা অতটা গায়ে মাখেনি ! কিন্তু ফেরার সময় একজন হটাত ছুঁটে এসে অনিতার একটা মাই টিপে দিয়ে পালিয়ে গেল ! আর বাকি বখাটে ছেলে গুলো দাঁত বার করে খ্যা খ্যা করে হাসতে লাগলো ! লজ্জায় সুবর্ণ আর অনিতার চোখ মুখের অবস্থা লাল হয়ে উঠলো !! সেদিন দুজনেই বাড়ি ফিরলো কিন্তু মুখ চোখ একদম থমথমে ! বাবা মা এমনকি অমিত অনেক বার প্রশ্ন করেও ওদের কাছ থেকে কোনো উত্তর পায়নি ! শেষে ভেবে নিয়েছিল হয়তো পরীক্ষা খারাপ হয়েছে তাই মন খারাপ ! কেউ আর ব্যাপারটাকে বেশি গুরুত্ব দেয়নি ! পরের দিন ছুটি ছিল ! অনিতা সন্ধ্যে বেলায় এসে সোজা সুবর্নাদের ঘরে ঢুকে পড়ল ! বেশ কিছুক্ষণ পরে যখন অনিতা চলে গেল তখন দুজনের মুখেই একটুকর হাসি লেগে ছিল !



bakituku ekhane dekhun

Sunday, 24 February 2013

সিল খোলা

স্কুলে যাবার পথেই সায়নির সঙ্গে দেখা। আমরা একক্লাসে পড়ি।সায়নি আমার খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু। সব কথা ও আমাকে বলে,আমিও কোন কথা---।শুধু একটা ব্যাপার ওকে বলিনি রাঙ্গা কাকুর কথা।একবার ভাবি বলবো আবার ভাবি যদি আমার রাঙ্গা কাকুকে খারাপ ভাবে? সাতপাঁচ ভেবে বলা হয়নি।মনে হল ওর হাতে কি যেন ধরা জিজ্ঞেস করি, তোর হাতে কিরে?
--ওষূধ।দ্যাখনা সিল খোলা। কাল দেখে নিইনি।দেখি বদলে দেয় কিনা।
ওষুধের দোকান আসতেই আমাকে দাড় করিয়ে রেখে ওষূধ বদলাতে গেল।একটা কথা ভেবে হাসি পেয়ে গেল।ওষূধের দোকান থেকে ফিরে এসে সায়নী জিজ্ঞেস করে, কিরে একা একা হাসছিস কেন?
--ও কিছু না। বদলে দিয়েছে?
--দেবে না মানে, কেউ নিশ্চয়ই ব্যবহার করেছে।
--তার কোন মানে নেই,এমনি এমনিও সিল ছেড়ে যেতে পারে।
--তুই সব জানিস। দ্যাখ মণি আজকাল অনেক কথা আমার কাছে চেপে যাস।থাক তোকে বলতে হবেনা।
--কি বলবো? কিছু হলে তো বলবো?
সায়নী কিছু বলে না,গম্ভীরভাবে হাটতে থাকে। বুঝতে পারি ভীষণ রেগে আছে। জিজ্ঞেস করি, কিরে রাগ করেছিস?
--আমার রাগে কি এসে যায় তোর?বিশ্বাস করে কোন কথা বলবি সেটা তোর ব্যাপার।
--বিশ্বাস কর তখন হাসছিলাম অন্য কারণে--।
--আমি শুনতে চাইনা।বানিয়ে বানিয়ে তোকে আর বলতে হবেনা---।
--বানিয়ে না মানে সিল ছেড়া বলতে একটা কথা মনে এসেছিল--হি-হি-হি--।
--হ্যা-হ্যা করে হাসিস নাতো।কি এমন হাসির কথা যে আমাকেও বলা যায়না?
সায়নীর সন্দেহ গভীরতর হয়।আমি জানি ও আমাকে খুব ভালবাসে, কোনদিন আমার ক্ষতি করবে না।
--জানিস সায়নী মেয়েদেরও সিল থাকে--।
--মানে? ভ্রু কুচকে তাকায় সায়নী।
--আমাদের ওখানে থাকে।যাকে বলে সতীচ্ছদ।
--আবার আজেবাজে কথা? তাহলে আমরা হিসি করি কিভাবে?
--ভিতরে দুটো ছিদ্র থাকে।একটার মধ্যে ছেলেরা করে আর তার উপরে একটা ছোট থাকে যা দিয়ে হিসি বের হয়।
সায়নী হাটা থামিয়ে আমার দিকে ঘুরে তাকায়। ভাবছে এত কথা কিভাবে জানলাম আমি? তারপর আবার চলতে শুরু করে।
--মণি তোকে একটা কথা জিজ্ঞেস করবো,সত্যি করে বলবি?
আমার বুক কেপে উঠল কি জিজ্ঞেস করবে সায়নী? কিছুক্ষন পর বলে,তোর কথা ঠিক হতে পারে আমিও লাইফ সায়েন্সে ছবি দেখেছি।কিন্তু এত কথা তুই জানলি কি করে?
এই ভয় পাচ্ছিলাম,এখন কি বলবো সায়নীকে?
--তোর অসুবিধে থাকলে বলতে হবে না।সায়নী বলে।
--না না তা নয় মানে আমাকে রাঙ্গা কাকু বলেছে।
--চোখ ছুয়ে বলতো খালি বলেছে আর কিছু করেনি?
আমি মাথা নীচু করে থাকি। সায়নী উচ্ছসিত ভাবে বলে, আমি আগেই জানতাম দিন দিন তোর যেভাবে জেল্লা দিচ্ছে।তুই খুব লাকি রে--।
--আহা এতে লাকের কি হল?তুই রাজি থাকলে তোর কথাও বলতে পারি।
সায়নী খুব উচ্ছসিত হয়ে ওঠে তারপর কি ভেবে বলে,আমার ভীষণ লজ্জা করে--।
--ন্যাকামো।খালি তোরটা দেখবে,তুইও কাকুরটা দেখতে পারবি।অবশ্য প্রথম প্রথম আমারও লজ্জা করছিল। তারপর খুব মজা লাগতো,শরীরটা নিয়ে এমন হাভাতেপনা করে কি বলবো--।
দাত দিয়ে ঠোট কামড়ে কি ভেবে সায়নী বলে, মণি আমার নাম বলিস না,বলবি তোর একজন বন্ধু।
দ্যাখ রাজি হয় কিনা?
--সে তোকে বলতে হবে না। আমি কি কাকুকে বলেছিলাম 'কাকু আমাকে চোদো?'অনেক কৌশল করে ফাঁদে ফেলতে হয়েছে।তুই দ্যাখনা বাছাধনকে কি ভাবে রাজি করাতে হয়।
মণিমালার আত্মবিশ্বাস দেখে আশ্বস্থ বোধ করে সায়নী।শরীরের মধ্যে কেমন করে,ডান হাতে মণিমালাকে জড়িয়ে ধরে চাপ দেয়। মণি ভাবে বড় মুখ করে সায়নীকে তো বলল,এখন কিভাবে ম্যানেজ করবে সেই চিন্তা মনের মধ্যে ঘুরঘুর করছে।
স্কুল থেকে ফিরে মণিমালা দেখল রাঙ্গাকাকু নিজের ঘরে আধশোয়া হয়ে বই পড়ছে। দরজা পেরোতে যাবে কানে এল, কে মণি এলি?
--হ্যা কিছু বলছো?
--আমার একটা উপকার করবি?
--কি?
--এককাপ চা করে দিবি? মাথাটা খুব ধরেছে।
--দিচ্ছি। তুমি আমার একটা উপকার করে দেবে?
নীল চোখ তুলে ভাইঝির দিকে তাকায়। তারপর কোমর ধরে নিজের দিকে টেনে বলে, এইসব বেশি করা ঠিক না,ভাল করে পড়াশুনা কর,পাস কর।তারপর বিয়ের পর যত ইচ্ছে কর।
--আমার জন্য বলছি না।
নীল তড়াক করে উঠে বসে ভাইঝির কথা শুনে, তুই এসব সবাইকে বলেছিস নাকি?
--সবাই না। আমার এক প্রিয় বন্ধু সায়নী।এত করে বলল আমি না করতে পারলাম না।
--বুঝতে পারছি।এই বয়সে স্বাভাবিক বরং দমন করলেই আরো খারাপ হয়।মনের মধ্যে বিকার বাসা বাঁধে।আচ্ছে ঠিক আছে তুই চা করে আনতো।
--তুমি কথা দিলে,মনে থাকে যেন।
--আর কাউকে বলবি না।
মণিমালা বই রেখে খুশি মনে চা করতে যায়। উঃ নিশ্চিন্ত হওয়া গেল।সায়নীকে কথা দিয়ে আশঙ্কা ছিল কথা রাখতে পারবে কিনা।কাকু এত সহজে রাজি হবে ভাবতে পারেনি। চা নিয়ে কাকুর গা ঘেষে বসে।কাকু জড়িয়ে ধরে চায়ে চুমুক দেবার আগে ভাইঝির ঠোট মুখে নিয়ে কিছুক্ষন চুষল।মণিমালা কাকুর বাড়াটা চেপে ধরে।
--আঃ কি হচ্ছে ছাড়।ওরকম করলে শক্ত হয়ে যাবে। এখন যা--বইটা শেষ করতে দে।
পরের দিন স্কুলে যেতে সায়নী বাথরুমে নিয়ে যায় মণিমালাকে।এত উচ্ছাস কেন বুঝতে পারে না।
দরজা বন্ধ করে পায়জামার দড়ি খুলে দেখালো।তলপেটের নীচে একগাছাও বাল নেই। মনী হাত বোলায়।সায়নী জিজ্ঞেস করে ,ভালো লাগছে না?
চেরার ঠিক উপরে কালো একটা তিল।মণি বলে, এখানে তিল থাকলে নাকি খুব সেক্স হয়। সায়নী আচমকা মণিমালাকে চুমু খেয়ে বলে, তুই আমার প্রাণের বন্ধু।কাকুমণি কিছু মনে করেনি তো?
--তুই আমার রাঙ্গাকাকুকে জানিস না। কাকু খুব উদার মনের মানুষ। কাকু বলে, কোন কিছু মনে চেপে রাখলে মন অসুস্থ হয়।শরীর ঢেকে রাখি বলেই আমাদের মনে দ্বিধা সংকোচ। এই রাখ ঢাকের জন্য সমাজে এত ধর্ষণ বলাৎ কারের ঘটনা।আদিম সমাজে এইসব অপরাধ ছিল না।
--আজকেই যাবো? সায়নী জিজ্ঞেস করে।
--শুভস্য শীঘ্রম। মণিমালা বলে।
--চল,আজ আর ক্লাস করবো না। সায়নী বলে।
দুজনে ধীরে ধীরে স্কুল ছেড়ে বেরিয়ে পড়ল। এতক্ষনে মণিমালার বাড়ি ফাকা,মাও গভীর ঘুমে ডুবে গেছে।রাঙ্গাকাকু বাসায় থাকলে হয়।সায়নী ঘামছে,ঢিপঢিপ করছে বুকের ভিতর।মোহগ্রস্তের মত পথ চলছে।দরজার কড়া নাড়তে খুলে দিল মা।
--কিরে চলে এলি? মা জিজ্ঞেস করে।
--ছুটি হয়ে গেলে কি বসে থাকবো?
--কি জানি বাবা,কথায় কথায় ছুটি কি যে হয়েছে আজকাল বুঝিনা বাপু--। মা উপরে চলে গেল।
কি ব্যাপার, মা দরজা খুলল? তাহলে কি কাকু বাড়ি নেই? দুপুর বেলা কোথায় গেল কাকু,ভাল্লাগে না।



BAKITUKU EKHANE 

Saturday, 23 February 2013

ধন সব বিরাজ করে, আমার হাতের মুঠোয়!




মুনা মজার মেয়ে। চেহারাটা মাই ডীয়ার! এমন ধরনের মেয়ে দেখে সবারই মনে হবে, এদের মনে দুঃখ কষ্টের ব্যাপারগুলো বুঝি কখনোই থাকে না। খুব সহজেই যে কাউকেই বন্ধু করে ফেলতে পারে।
মুনার চেহারাটা এমনিই যে, প্রেমিকা করে খুব কাছে পেতে যেমনি ইচ্ছে করে, প্রেমিকা করে নিতে না পারলে, বোন ডেকে হলেও কথা বিনিময় করতে ইচ্ছে করে! কিছুটা সময় হলেও একসংগে সময় কাটাতে মন চায়। আর, মুনাও তেমনি বুদ্ধিমতী! প্রেমের ফাঁদে কখনোই কাউকে আঁটকাতে চায়না। তবে, মিষ্টি হাসিতে যে কারো সাথেই কথা বিনিময় করতে মোটেও কার্পণ্য করে না। হাস্য রসের কথাবার্তায় জমিয়েও রাখতে পারে দীর্ঘ আড্ডার সময়।

মুনার বয়সও খুব বেশী হয়নি। এই সামনের বর্ষায় বাইশে পা দেবে। এমন একটা মেধাবী মেয়ে, লেখাপড়াটা চালিয়ে যেতে পারলে বোধ হয়, অনেক দূরই এগুতে পারতো। সারাদিন যে মেয়ের মাথায় এটা সেটা পড়ালেখা বহির্ভূত ব্যাপার স্যাপারগুলোই বেশী স্থান পায়, তার পড়ালেখা আবার এগুবে কি করে?
মুনা এইচ, এস, সি, টা পাশ করে আর এগুয়নি। ব্যাংকের চাকুরীটাও হয়ে গিয়েছিলো, এইচ, এস, সি, পাশ করার আগেই। আসলে মুনার ব্যাপার স্যাপারগুলো এমনই। স্বাধীনচেতা! যখন যা খুশী করতে ইচ্ছে করে, তখন তাই করে ফেলে। অনেকটা মামূলী করেই ব্যাংকের চাকুরীটাতে আবেদন করেছিলো। কেনো যে চাকুরীটা হলো, তা সে নিজেও বুঝতে পারেনা। এখনো মা বাবার সাথেই থাকে। তাই বেতনের টাকাটা পুরুপুরিই তার। সেই সাথে আরো বেশী স্বধীনতাও যেনো তার চালচলনে বৃদ্ধি পেতে থাকলো।

মুনাকে দেখে কখনোই মনে হবে না যে, সে একটা কামুকী ধরনের মেয়ে। সুন্দর মন ভরানো হাসিটা তো সব সময়ই ঠোটে লেগে থাকে। দেহটাও খানিকটা মুটিয়ে, বক্ষও অনেক উঁচু! তবে, পোষাক আশাকে এমনিভাবেই ঢেকে রাখে যে, সাধারন চোখে আয়তন খুব একটা অনুমান করার মতো নয়। শুধু তাই নয়। মুনার চেহারার মাঝে শিশু সুলভতা যেমনি স্পষ্ট! ঠিক তেমনি সে যদি শাসনের স্তম্ভে দাঁড়িয়ে হুকুম করার প্রচেষ্টাও করে, তখন কেমন যেনো প্রাকৃতিক ভাবেই তার হুকুম পালন করতে বাধ্য হয় মানুষ। সংসারে এমন মেয়েরাই বুঝি সবচেয়ে বেশী সুখী, তবে সংখ্যায় অনেক কম। যাদের প্রতি সবারই মনের ভালোবাসা গুলো উছলে উছলে পরতে থাকে, দিনের পর দিন। অন্য কথায় এরা হয়ে থাকে অধিকাংশ পুরুষদেরই স্বপ্নের রাজকন্যা। একটি দিনের জন্যে হলেও যদি কথা বলার সুযোগটা হতো, তেমনি স্বপ্নে বিভোরও হয়ে থাকে অনেক অনেক যুবক, সারাদিন, সারা ক্ষণ! অথবা রাত বাড়ার সাথে সাথে, অধিক নিসংগতায়, মুনাদের মতো মেয়েদের কথা ভেবে ভেবে পুরু রাতও কাটিয়ে দেয়। এতে করে মুনাদের মতো মেয়েদের মনে কখনো ভালোবাসা জাগ্রত হয় কিনা, তা বোধ হয় স্বয়ং বিধাতাই ভালো জানেন। আমার এই গলপো, সেই মুনাকে নিয়েই।

রেনুর বাবা সদ্য বদলী হয়ে এসেছে এই এলাকায়। রেনুকে সুন্দরী বলার চাইতে রূপসী বলাটাই বোধ হয় বেশী শুদ্ধ হবে। শুধু চেহারাতেই নয়, তার সারা অংগেই যেনো রূপের আগুন, ঢল ঢল করে গড়িয়ে পরে! টানা টানা কাজল কালো চোখ, সরু ঠোট! পাগল করা হাসি, সেই সাথে বুক ফুলিয়ে চলার মতো উঁচু বক্ষ। খানিক আঁট সাঁট পোষাক পরে বলে, খালি চোখেও তার বক্ষ অনুমান করা যায়। এমন মেয়েরাও অনেক যুবকদের স্বপ্নের রাজকন্যা হয়ে থাকে। তবে, খুব বেশীদিন মনের ভেতর টিকে থাকে না। তার বড় কারন বোধ হয়, এসব মেয়েরা যতই রূপসী হউকনা কেনো, যতই যৌন বেদনাময়ী হউক না কেনো, গুছিয়ে কথা বলতে পারে না। একটু বোকা বোকা ধরনেরই হয়ে থাকে।
রেনুর এইচ, এস, সি, পরীক্ষাটা দেবার কথা ছিলো এবারই। বাবার বদলীর অযুহাতেই পরীক্ষাটা আর দেয়া হয়নি। কখনো দেবে বলেও মনে হয়না। এসব মেয়েদের কখনোই কোন লক্ষ্য থাকে না। জীবন সম্পর্কে অনেকটা উদাসীনই বলা চলে। রূপ নিয়ে যখন জন্মই হয়েছে, সেটাকে পূঁজি করে, দিব্যি হাওয়ায় গা ভাসিয়ে দিয়েই জীবন কাটিয়ে দেয়।

এই ধরনের মেয়েগুলো, যতই রূপসী হউক না কেনো, কথা বোধ হয় খুব কমই বলে। বোকা বোকা ধরনেরই চেহারা করে থাকে সব সময়। তবে, অন্যের কথা শুনতেই বোধ হয় বেশী পছন্দ করে। একবার কাউকে মনে ধরে গেলে, তার সাথেই সখ্যতাটা জমে উঠে খুব বেশী!

আর, আমাদের মুনা এমনি একটি মেয়ে যে, তাকে কাউকে বন্ধু করে নিতে হয়না। বরং, সবাই কেনো যেনো তাকেই বন্ধু করে নিতে চায়। রেনুর সাথে মুনার বয়সের পার্থক্য কমসে কম দুই। মুনাই বয়োজেষ্ঠ্য। তবে, মুনাকে দেখলে মনে হবে, মুনাই বুঝি রেনুর চাইতে দুই বছরের ছোট। আর সেই মুনার সাথেই রেনুর সখ্যতাটা গড়ে উঠলো, এই এলাকায় আসার পর থেকেই।

মুনার অফিস আটটা পাঁচটা। অফিস থেকে ফিরে আসতে না আসতেই রেনু ছুটে যায় মুনাদের বাসায়। তারপরই শুরু হয় খুচুর খাচুর আলাপ। মাঝে মাঝে একসংগে, বাইরে বিকালের হাঁটা হুঁটা।

দুটি মেয়ে এক সংগে থাকলে, সারাদিন খুচুর খাচুর কি আলাপ করে কে জানে? মুনার মুখে কিছু আটকায় না। ছোট বড়ও মানে না। বিশ্রী বিশ্রী কথাও সে নির্দ্বিধায় যে কারো সাথেই আলাপ করতে পারে। সেই বিশ্রী কথাগুলোও এমনি মজা করে বলে যে, শুনতেও খুব মধুর লাগে। তা বোধ হয়, তার মায়াবী সুন্দর মন কাঁড়া শিশু সুলভ চেহারাটির জন্যেই।

মুনা আর রেনু খুচুর খাচুর ঘন্টার পর ঘন্টা কি আলাপ করে, তারাই শুধু জানে। তবে, যখন হঠাৎই দুজনে হাসিতে ফেটে পরে, তখনই মনে হয়, খুব মজার মজার আলাপই বুঝি তারা করছে।
সেদিন বিকেলেও রেনুর সাথেই বিকালটা কাটছিলো, নিজের ঘরেই। সন্ধ্যা প্রায় হয়েই আসছিলো। হঠাৎ টি, ভি, তে এক সুঠাম দেহের পুরুষকে দেখে, মুনা রেনুকে লক্ষ্য করেই বললো, একটা লাল পোলা! ওর ওটা যদি হাতের মুঠুতে আনা যেতো, তাহলে যা মজা লাগতো না!
রেনু চোখ গোল গোল করেই বললো, হাতের মুঠুতে? কি?
মুনা বললো, ওর ওটা আর কি! ধন!

এতটা দিন মুনার সাথে থেকে থেকে, রেনুও অনেক বদলে গেছে। মানুষ বোধ হয় পরিবেশেরই দাস। যে কোন পরিবেশেই নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। মুনার কথা শুনে, রেনু খানিকটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো ঠিকই। তারপরও বললো, ছি ছি, বলেন কি? কে না কে! ঘিন্না লাগবে না?
মুনা সোফাতে কাৎ হয়ে, কনুইটা ডানায় ঠেকিয়ে, গালে হাতটা ঠেকিয়ে মজা করেই বললো, ধ্যাৎ, ঘিন্না লাগবে কেনো? ধন কি ঘেন্না করার জিনিষ নাকি? ওটার জন্যেই তো দুনিয়াটা টিকে আছে! ধন মানে বুঝো? ধন হলো সম্পদ এর অপর নাম! ধন সম্পদ নিজ হাতে না থাকলে বেঁচে থাকাটাই তো বৃথা!
রেনু বললো, তা না হয় বুঝলাম। তার মানে ওই লোকটার সাথে প্রেম করতে চাইছেন, এই তো?
মুনা চোখ কপালে তুলে বললো, বলো কি? প্রেম করবো ঐ লোকের সাথে? খোঁজে পাবো কই? খোঁজে পেলেও, আমার মতো সাধারন একটা মেয়ে! পাত্তা পাবো নাকি আমি?
রেনু বললো, তাহলে?
মুনা তার হাতটা দ্রুত ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে বললো, যদির কথা বলছি! একবার যদি কাছে পেতাম! ওর ধনটা যদি একবার মুঠিতে নেয়া যেতো, তাহলে ঠিক এইভাবে মারতেই মজা হতো!
রেনু বললো, কি যে বলেন, কার না কার ধন! প্রেমিক হলে একটা কথা ছিলো। তারপরও, হাতে ধরা! কি ঘিন্নার ব্যাপার!
মুনা বললো, ঘিন্না লাগবে কেনো?
রেনু বললো, শুনেছি, ছেলেদের ও জায়গা থেকে কি জানি বেড় হয়!
BAKITUKU EKHANE DEKHUN