Saturday, 23 February 2013

ধন সব বিরাজ করে, আমার হাতের মুঠোয়!




মুনা মজার মেয়ে। চেহারাটা মাই ডীয়ার! এমন ধরনের মেয়ে দেখে সবারই মনে হবে, এদের মনে দুঃখ কষ্টের ব্যাপারগুলো বুঝি কখনোই থাকে না। খুব সহজেই যে কাউকেই বন্ধু করে ফেলতে পারে।
মুনার চেহারাটা এমনিই যে, প্রেমিকা করে খুব কাছে পেতে যেমনি ইচ্ছে করে, প্রেমিকা করে নিতে না পারলে, বোন ডেকে হলেও কথা বিনিময় করতে ইচ্ছে করে! কিছুটা সময় হলেও একসংগে সময় কাটাতে মন চায়। আর, মুনাও তেমনি বুদ্ধিমতী! প্রেমের ফাঁদে কখনোই কাউকে আঁটকাতে চায়না। তবে, মিষ্টি হাসিতে যে কারো সাথেই কথা বিনিময় করতে মোটেও কার্পণ্য করে না। হাস্য রসের কথাবার্তায় জমিয়েও রাখতে পারে দীর্ঘ আড্ডার সময়।

মুনার বয়সও খুব বেশী হয়নি। এই সামনের বর্ষায় বাইশে পা দেবে। এমন একটা মেধাবী মেয়ে, লেখাপড়াটা চালিয়ে যেতে পারলে বোধ হয়, অনেক দূরই এগুতে পারতো। সারাদিন যে মেয়ের মাথায় এটা সেটা পড়ালেখা বহির্ভূত ব্যাপার স্যাপারগুলোই বেশী স্থান পায়, তার পড়ালেখা আবার এগুবে কি করে?
মুনা এইচ, এস, সি, টা পাশ করে আর এগুয়নি। ব্যাংকের চাকুরীটাও হয়ে গিয়েছিলো, এইচ, এস, সি, পাশ করার আগেই। আসলে মুনার ব্যাপার স্যাপারগুলো এমনই। স্বাধীনচেতা! যখন যা খুশী করতে ইচ্ছে করে, তখন তাই করে ফেলে। অনেকটা মামূলী করেই ব্যাংকের চাকুরীটাতে আবেদন করেছিলো। কেনো যে চাকুরীটা হলো, তা সে নিজেও বুঝতে পারেনা। এখনো মা বাবার সাথেই থাকে। তাই বেতনের টাকাটা পুরুপুরিই তার। সেই সাথে আরো বেশী স্বধীনতাও যেনো তার চালচলনে বৃদ্ধি পেতে থাকলো।

মুনাকে দেখে কখনোই মনে হবে না যে, সে একটা কামুকী ধরনের মেয়ে। সুন্দর মন ভরানো হাসিটা তো সব সময়ই ঠোটে লেগে থাকে। দেহটাও খানিকটা মুটিয়ে, বক্ষও অনেক উঁচু! তবে, পোষাক আশাকে এমনিভাবেই ঢেকে রাখে যে, সাধারন চোখে আয়তন খুব একটা অনুমান করার মতো নয়। শুধু তাই নয়। মুনার চেহারার মাঝে শিশু সুলভতা যেমনি স্পষ্ট! ঠিক তেমনি সে যদি শাসনের স্তম্ভে দাঁড়িয়ে হুকুম করার প্রচেষ্টাও করে, তখন কেমন যেনো প্রাকৃতিক ভাবেই তার হুকুম পালন করতে বাধ্য হয় মানুষ। সংসারে এমন মেয়েরাই বুঝি সবচেয়ে বেশী সুখী, তবে সংখ্যায় অনেক কম। যাদের প্রতি সবারই মনের ভালোবাসা গুলো উছলে উছলে পরতে থাকে, দিনের পর দিন। অন্য কথায় এরা হয়ে থাকে অধিকাংশ পুরুষদেরই স্বপ্নের রাজকন্যা। একটি দিনের জন্যে হলেও যদি কথা বলার সুযোগটা হতো, তেমনি স্বপ্নে বিভোরও হয়ে থাকে অনেক অনেক যুবক, সারাদিন, সারা ক্ষণ! অথবা রাত বাড়ার সাথে সাথে, অধিক নিসংগতায়, মুনাদের মতো মেয়েদের কথা ভেবে ভেবে পুরু রাতও কাটিয়ে দেয়। এতে করে মুনাদের মতো মেয়েদের মনে কখনো ভালোবাসা জাগ্রত হয় কিনা, তা বোধ হয় স্বয়ং বিধাতাই ভালো জানেন। আমার এই গলপো, সেই মুনাকে নিয়েই।

রেনুর বাবা সদ্য বদলী হয়ে এসেছে এই এলাকায়। রেনুকে সুন্দরী বলার চাইতে রূপসী বলাটাই বোধ হয় বেশী শুদ্ধ হবে। শুধু চেহারাতেই নয়, তার সারা অংগেই যেনো রূপের আগুন, ঢল ঢল করে গড়িয়ে পরে! টানা টানা কাজল কালো চোখ, সরু ঠোট! পাগল করা হাসি, সেই সাথে বুক ফুলিয়ে চলার মতো উঁচু বক্ষ। খানিক আঁট সাঁট পোষাক পরে বলে, খালি চোখেও তার বক্ষ অনুমান করা যায়। এমন মেয়েরাও অনেক যুবকদের স্বপ্নের রাজকন্যা হয়ে থাকে। তবে, খুব বেশীদিন মনের ভেতর টিকে থাকে না। তার বড় কারন বোধ হয়, এসব মেয়েরা যতই রূপসী হউকনা কেনো, যতই যৌন বেদনাময়ী হউক না কেনো, গুছিয়ে কথা বলতে পারে না। একটু বোকা বোকা ধরনেরই হয়ে থাকে।
রেনুর এইচ, এস, সি, পরীক্ষাটা দেবার কথা ছিলো এবারই। বাবার বদলীর অযুহাতেই পরীক্ষাটা আর দেয়া হয়নি। কখনো দেবে বলেও মনে হয়না। এসব মেয়েদের কখনোই কোন লক্ষ্য থাকে না। জীবন সম্পর্কে অনেকটা উদাসীনই বলা চলে। রূপ নিয়ে যখন জন্মই হয়েছে, সেটাকে পূঁজি করে, দিব্যি হাওয়ায় গা ভাসিয়ে দিয়েই জীবন কাটিয়ে দেয়।

এই ধরনের মেয়েগুলো, যতই রূপসী হউক না কেনো, কথা বোধ হয় খুব কমই বলে। বোকা বোকা ধরনেরই চেহারা করে থাকে সব সময়। তবে, অন্যের কথা শুনতেই বোধ হয় বেশী পছন্দ করে। একবার কাউকে মনে ধরে গেলে, তার সাথেই সখ্যতাটা জমে উঠে খুব বেশী!

আর, আমাদের মুনা এমনি একটি মেয়ে যে, তাকে কাউকে বন্ধু করে নিতে হয়না। বরং, সবাই কেনো যেনো তাকেই বন্ধু করে নিতে চায়। রেনুর সাথে মুনার বয়সের পার্থক্য কমসে কম দুই। মুনাই বয়োজেষ্ঠ্য। তবে, মুনাকে দেখলে মনে হবে, মুনাই বুঝি রেনুর চাইতে দুই বছরের ছোট। আর সেই মুনার সাথেই রেনুর সখ্যতাটা গড়ে উঠলো, এই এলাকায় আসার পর থেকেই।

মুনার অফিস আটটা পাঁচটা। অফিস থেকে ফিরে আসতে না আসতেই রেনু ছুটে যায় মুনাদের বাসায়। তারপরই শুরু হয় খুচুর খাচুর আলাপ। মাঝে মাঝে একসংগে, বাইরে বিকালের হাঁটা হুঁটা।

দুটি মেয়ে এক সংগে থাকলে, সারাদিন খুচুর খাচুর কি আলাপ করে কে জানে? মুনার মুখে কিছু আটকায় না। ছোট বড়ও মানে না। বিশ্রী বিশ্রী কথাও সে নির্দ্বিধায় যে কারো সাথেই আলাপ করতে পারে। সেই বিশ্রী কথাগুলোও এমনি মজা করে বলে যে, শুনতেও খুব মধুর লাগে। তা বোধ হয়, তার মায়াবী সুন্দর মন কাঁড়া শিশু সুলভ চেহারাটির জন্যেই।

মুনা আর রেনু খুচুর খাচুর ঘন্টার পর ঘন্টা কি আলাপ করে, তারাই শুধু জানে। তবে, যখন হঠাৎই দুজনে হাসিতে ফেটে পরে, তখনই মনে হয়, খুব মজার মজার আলাপই বুঝি তারা করছে।
সেদিন বিকেলেও রেনুর সাথেই বিকালটা কাটছিলো, নিজের ঘরেই। সন্ধ্যা প্রায় হয়েই আসছিলো। হঠাৎ টি, ভি, তে এক সুঠাম দেহের পুরুষকে দেখে, মুনা রেনুকে লক্ষ্য করেই বললো, একটা লাল পোলা! ওর ওটা যদি হাতের মুঠুতে আনা যেতো, তাহলে যা মজা লাগতো না!
রেনু চোখ গোল গোল করেই বললো, হাতের মুঠুতে? কি?
মুনা বললো, ওর ওটা আর কি! ধন!

এতটা দিন মুনার সাথে থেকে থেকে, রেনুও অনেক বদলে গেছে। মানুষ বোধ হয় পরিবেশেরই দাস। যে কোন পরিবেশেই নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। মুনার কথা শুনে, রেনু খানিকটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো ঠিকই। তারপরও বললো, ছি ছি, বলেন কি? কে না কে! ঘিন্না লাগবে না?
মুনা সোফাতে কাৎ হয়ে, কনুইটা ডানায় ঠেকিয়ে, গালে হাতটা ঠেকিয়ে মজা করেই বললো, ধ্যাৎ, ঘিন্না লাগবে কেনো? ধন কি ঘেন্না করার জিনিষ নাকি? ওটার জন্যেই তো দুনিয়াটা টিকে আছে! ধন মানে বুঝো? ধন হলো সম্পদ এর অপর নাম! ধন সম্পদ নিজ হাতে না থাকলে বেঁচে থাকাটাই তো বৃথা!
রেনু বললো, তা না হয় বুঝলাম। তার মানে ওই লোকটার সাথে প্রেম করতে চাইছেন, এই তো?
মুনা চোখ কপালে তুলে বললো, বলো কি? প্রেম করবো ঐ লোকের সাথে? খোঁজে পাবো কই? খোঁজে পেলেও, আমার মতো সাধারন একটা মেয়ে! পাত্তা পাবো নাকি আমি?
রেনু বললো, তাহলে?
মুনা তার হাতটা দ্রুত ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে বললো, যদির কথা বলছি! একবার যদি কাছে পেতাম! ওর ধনটা যদি একবার মুঠিতে নেয়া যেতো, তাহলে ঠিক এইভাবে মারতেই মজা হতো!
রেনু বললো, কি যে বলেন, কার না কার ধন! প্রেমিক হলে একটা কথা ছিলো। তারপরও, হাতে ধরা! কি ঘিন্নার ব্যাপার!
মুনা বললো, ঘিন্না লাগবে কেনো?
রেনু বললো, শুনেছি, ছেলেদের ও জায়গা থেকে কি জানি বেড় হয়!
BAKITUKU EKHANE DEKHUN 

No comments:

Post a Comment